রণক্ষেত্র রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ে ফের সরব বি-টাউন

একদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত সফরে এসছেন। অন্যদিকে, উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে শুরু হয়েছে অশান্তি। সোমবার থেকেই কার্যত দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে চলছে বিক্ষিপ্ত অশান্তি। যার জেরে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৭ জন। আহত হয়েছেন ১০০রও বেশি মানুষ। মূলত সিএএ বিরোধী গোষ্ঠী ও সিএএ সমর্থনকারীদের মধ্যে গতকাল থেকেই শুরু হয়েছে অশান্তি। ভাঙচুর, আগুন লাগানোর জেরে ক্ষতিগ্রস্থ বহু মানুষের ঘরবাড়ি ও দোকান। অশান্ত দিল্লিতে শান্তি ফেরাতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের সঙ্গে এদিন জরুরি বৈঠকেও বসেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজাল। অমিত শাহের পাশাপাশি আজই মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল অশান্ত এলাকার বিধায়কদের নিয়ে নিজের বাসভবনে জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন। ডাকা হয়েছে সরকারি আমলাদেরও। গতকাল অর্থাত্‍ সোমবার থেকেই উত্তর-পূর্ব দিল্লির পাঁচটি মেট্রো স্টেশন (জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবারপুর, গোকুলপুরি, শিব বিহার ও জোহরি এনক্লেভ) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিনও বন্ধ রয়েছে প্রত্যেকটি মেট্রো স্টেশন, এমনটাই জানিয়েছে মেট্রো দফতর। গত সোমবারই গভীর রাতেই দিল্লির পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন সকালেই দিল্লিবাসীর কাছে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন কেজরিওয়াল। দিল্লির সংঘর্ষের ছবি ছড়িয়ে পড়তেই সমাজের প্রায় সব স্তরের মানুষই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েননি বলিউড সেলেবরাও।  রণক্ষেত্র রাজধানীর এই পরিস্থিতি নিয়ে ফের সরব হয়েছে বলিমহল। গীতিকার জাভেদ আখতার ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘দিল্লিতে দিনে দিনে সংঘর্ষের মাত্রা বেড়েই চলেছে। আমার মনে হচ্ছে রাস্তায় সব কপিল মিশ্ররা নেমে পড়েছেন। শুধুমাত্র সিএএ বিরোধী প্রচার চলছে বলে এই ঘটনাটি ইচ্ছাকৃতভাবে করানো হচ্ছে। আশা করি দিল্লি পুলিশ খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান করবে।’ ট্যুইটে চাঁচাছোলা মন্তব্য করেছেন পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপও। তিনি এদিন ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘এখন এটা স্পষ্ট যে সিএএকে সমর্থন করা মানেই মুসলিম বিরোধিতা।’ গায়ক বিশাল দাদলানী জানিয়েছেন, ‘বিশ্বাস হচ্ছে না, শুধুমাত্র একটা আন্দোলনকে থামানোর জন্যই এটা করা হচ্ছে।’ অভিনেত্রী এষা গুপ্তা দিল্লির বর্তমান পরিস্থিতিকে সিরিয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন। শুধু ট্যুইট না করে কেজরিওয়ালের প্রশাসন হিংসা রুখতে কিছু করুন বলেও আবেদন করেন স্বরা ভাস্কর। দিল্লিতে হিংসার জেরে যে পুলিস কর্মী প্রাণ হারান, তাঁর সাহসকে কুর্ণিশ জানান রিচা চাড্ডা। পাশাপাশি আরও বলেন, যে সমস্ত মানুষ হিংসা ছড়াচ্ছে শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করা হোক। দিল্লির হিংসার বিরুদ্ধে মুখ খুলে সরব হন রবিনা ট্যান্ডনও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ভারত সফরে হাজির হয়েছেন, সেই সময় দিল্লি জ্বলছে। এর থেকে লজ্জার কিছু নেই বলেও মন্তব্য করেন বলিউড অভিনেতা রণবীর শোরে। এত হিংসা কোন জায়গা থেকে আসছে বলে প্রশ্ন তোলেন গওহর খান। তিনি বলেন, যারা হিংসা ছড়াচ্ছে তাদের কোনও ধর্ম নেই। তা সত্ত্বেও কেন ধর্মের ধ্বজা নিয়ে সাধারণ মানুষের উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে বলেও প্রশ্ন তোলেন প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া। দিল্লির ঘটনায় অভিনেতা মহম্মদ জিসান আয়ুব ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘যারা অশান্তি লাগাতে চাইছেন তাঁরাই করছেন এটা, খুবই ভেবেচিন্তে এই কাজটা করা হচ্ছে। এই একই ঘটনা ২০০২ সালেও করা হয়েছিল।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *