দ্বিতীয়বার ক্যান্সারে আক্রান্ত টলিউড ধারাবাহিকের জনপ্রিয় মুখ ঐন্দ্রিলা শর্মা। কেমোথেরাপি চলছে। আর সেকারণেই এক ঢাল চুল কেটে ন্যাড়া হয়ে যেতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। তাঁর জন্যই মাথার চুল কেটে ফেলেছিলেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু পারমিতা সেনগুপ্ত। মেয়ের পাশে দাঁড়াতে নিজের চুল কেটে ফেলেছেন ঐন্দ্রিলার বাবাও। বাবারা অনেক সময় নিজেদের মুখে কিছু বলতে পারেন না । তাই কাজের মাধ্যমে সেটা করে দেখান। আর সেকথাই অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন ‘জিয়নকাঠি’ তারকা। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাবার সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করেছেন ঐন্দ্রিলা। বাবা শক্ত হাতে জড়িয়ে রেখেছেন মেয়েকে। দু’জনের মাথাতেই কোনও চুল নেই। ঐন্দ্রিলা লিখেছেন, ‘বাবা কখনও মুখে বলে না ভালবাসি, নীরবে প্রাণ দিয়ে ভালবেসে যায়। কাল হঠাৎ সব চুল কেটে দেয়। বাবার ভালবাসা হয়তো এরকমই হয়।’ শেষে লিখেছেন, ‘আমি আশীর্বাদধন্য’। এ দুনিয়ায় ভালবাসার সমান শক্তিশালী আর কিছুই নেই। ভালবেসে ত্যাগ করে দেওযা যায় নিজের সমস্ত ঐশ্বর্য, সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য। ভালবাসার অন্য নাম বোধ হয় পাশে থাকা, বিশ্বাস, ভরসা আর শক্ত করে ধরা হাত। ভালবাসা মানে পিছু হটা নয়, মুখ ফিরিয়ে নেওয়া নয়, বরং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জীবনের যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া। আর তার মধ্যে সবচেয়ে প্রত্যাশাহীন ভালবাসা হল বাবা-মা’র ভালবাসা। তেমন ভালবাসাই প্রত্যক্ষ করলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। যখন ক্লাস ইলেভেনের ছাত্রী ঐন্দ্রিলা সে সময় তাঁর শিরদাঁড়ায় বাধা বেঁধেছিল এই মারণ রোগ। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সেই রোগ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ক্যান্সার ফের থাবা বসিয়েছে তাঁর ফুসফুসে। ৭ সেন্টিমিটারের একটি টিউমর তৈরি হয়েছে সেখানে। এ বছর সরস্বতী পুজোর দিন শ্যুটিং ফ্লোরেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। তাঁকে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, চিকিৎসকরা জানান তাঁর বাম ফুসফুসে ক্যান্সার ফের থাবা বসিয়েছে। আবারও শুরু হয় নতুন লড়াইয়ের গল্প। তবে কখনওই একা এ যুদ্ধে নামেননি অভিনেত্রী। বাবা-মা, বন্ধুবান্ধব, এবং পরিশেষে প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরি অর্থাৎ পর্দার ‘বামাক্ষ্যাপা’ সবসময় রয়েছেন তাঁর সঙ্গে। তাঁর দেখভাল করা থেকে যত্ন করে খাইয়ে দেওয়া, পাশে থেকে ভালবাসা আর ভরসার হাতটা বাড়িয়ে দেওয়া সবটাই করতে দেখা গিয়েছে সব্যসাচীকে। আর বাবা-মা তো মেয়ের পাশে আছেনই। নিজেদের সবটুকু উজার করে তাঁরা সন্তানের পাশে এসে দাঁড়ান। ব্যতিক্রম ঘটল না ঐন্দ্রিলার ক্ষেত্রেও। তাঁর সঙ্গে রয়েছে অসংখ্য অনুরাগীর ভালোবাসা ও আশীর্বাদ। আর তা নিয়েই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ঐন্দ্রিলা।