প্রয়াত বাংলাদেশের স্বনামধন্য অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান। আজ শনিবার সকাল ৮টা নাগাদ অভিনেতার নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে এ টি এম শামসুজ্জামান হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই দিন বিকালে তাঁকে ঢাকার গেন্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। খাবার খেলেই বমি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ডা. আতাউর রহমান খানের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। হাসপাতালে তাঁর করোনা পরীক্ষা করানো হলে ফলাফল নেগেটিভ আসে। হাসপাতাল থেকে গতকাল তিনি বাড়িতে ফিরেছিলেন। এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তার পুত্রবধূ রুবী বলেন, ‘ঘুমের মধ্যেই বাবার মৃত্যু হয়েছে। গতকালই বাবাকে বাসায় আনা হয়েছিলো। কাল রাতে বাবার সঙ্গে সবাই অনেক কথাও বলেছিলাম আমরা। অথচ আজ বাবা নেই।’ ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে এ টি এম শামসুজ্জামানের বাসা থেকে ফোন করে খবরটি আমাকে জানানো হয়েছে। কাল রাতে বেশ দেরি করে ঘুমিয়েছিলেন তিনি। আজ সকালে নাশতা করার জন্য তাকে ডাকতে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান তিনি আর বেঁচে নেই।’ গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এ টি এম শামসুজ্জামান অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অভিনয়ে অবদানের জন্য পাঁচ বার তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়াও পেয়েছেন আজীবন সম্মাননা, একুশে পদক। ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর গুণী এই অভিনেতার জন্ম নোয়াখালীর দৌলতপুরে। তিনশর বেশি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। সিনেমার বাইরে তিনি অভিনয় করেছেন টেলিভিশন নাটকেও। ‘নয়নমনি’ সিনেমায় খলনায়ক হিসেবে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এটিএম শামসুজ্জামান। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে- নয়নমনি, অবুঝ মন, দায়ী কে, অবুঝ বউ, মলুয়া, ওরা ১১ জন, লাঠিয়াল, সংগ্রাম, গোলাপী এখন ট্রেনে, সূর্য দীঘল বাড়ি, অশিক্ষিত, রামের সুমতি, ছুটির ঘণ্টা ইত্যাদি। অভিনেতার পাশাপাশি তিনি একজন চিত্রনাট্যকারও ছিলেন। বেশ কয়েকটি সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছেন তিনি। বিখ্যাত পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে ‘বিষকন্যা’ সিনেমায় প্রথম কাজ শুরু করেন তিনি। তিনি প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য রচনা করেন ‘জলছবি’ সিনেমার জন্য। এই সিনেমার মাধ্যমেই নায়ক ফারুকের আত্মপ্রকাশ ঘটে। টেলি সিনে-র পক্ষ থেকে প্রয়াত অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান-এর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।