প্রথাগত গুড লুকিং নায়কদের দলে পড়েন না তিনি। তবে ‘দলছুট’ এই তারকাকে মানুষ তাঁর অভিনয় দক্ষতার জন্যই পছন্দ করে, ভালোবাসে। সেই নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি দেশের জাতপাতের বিভেদ নিয়ে যখন কথা বলেন তখন সত্যিই অনেক প্রশ্ন উঠে আসে। তাঁর মতো একজন তারকাকেও যদি জাতপাতের বিভেদের জন্য অপমানিত হতে হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কোন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে, সেটা আন্দাজ করাই যায়! ”আপনি বলিউড তারকা নাকি শিল্পপতি, এসবে ওদের কিছু যায় আসে না। ওরা ওসব কথা কানে তুলবে না। ওদের কাছে একটাই বিষয় গ্রহণযোগ্য। আপনি কোন জাতের!” কথাগুলো বলতে গিয়ে গলা ধরে আসছিল নওয়াজউদ্দিনের। হাথরস কাণ্ডকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন নওয়াজউদ্দিন। তিনিও উত্তরপ্রদেশের মানুষ। একটা সময় তাঁর পরিবারকে জাতপাতের বিভেদের জন্য অনেক অপমান সহ্য করতে হয়েছে বলে দাবি করলেন নওয়াজ। পুরনো কথা মনে করে তিনি বললেন, ”আমার দিদা ছিল তথাকথিত ছোট জাতের মানুষ। তাই গ্রামের উঁচু জাতের লোকেরা তাঁকে অনেক অপমান করেছে। তাঁকে প্রায় এক ঘরে করে রাখা হত। এখনো গ্রামে আমাদের পরিবারকে নিচু নজরে দেখা হয়। এটাই গ্রামের সংস্কৃতি। আসলে এদেশে জাতিভেদের প্রথা অনেক গভীরে লুকিয়ে আছে। সেটাকে উপড়ে ফেলতে আরো কত বছর লাগবে জানি না। আমি বলিউড স্টার। তাতে আমার গ্রামের লোকের মানসিকতায় কোনও পরিবর্তন হয় না।” আমরা প্রায়ই বলে থাকি, সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষমতা অপরিসীম। সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ রাতারাতি হিরো হয়। আবার কারো কুকীর্তি ফাঁস করতেও সোশ্যাল মিডিয়ার জুড়ি মেলা ভার। মুহূর্তে মানুষের বিচার হয়। মুহূর্তে মানুষকে জিরো থেকে হিরো করে তোলা হয়। এমন দাবিকে আংশিক সত্যি বলে মনে করছেন নওয়াজউদ্দিন। তাঁর যুক্তি, ”সোশ্যাল মিডিয়া শহরাঞ্চলে মানুষকে কানেক্ট করে। কিন্তু দেশের গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষ এখনও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অনেক দূরে। আর জাত-পাত নিয়ে বিভেদের মূল সমস্যা গ্রামাঞ্চলে। সেখানেই জাতপাত নিয়ে বিভেদ সবথেকে বেশি। শহরের মানুষের কিছু যায় আসে না, আপনি কোন জাতের! কিন্তু গ্রামে জাতপাতের বিভেদ কোন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে তা শহরে বসে আন্দাজ করা কঠিন। গ্রামীণ ভারত অনেক বড়। তাই এদেশে জাতপাতের সমস্যাও বিশাল আকার নিয়েছে।”