প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে ২৫ কোটি টাকা অনুদান অক্ষয়ের

করোনা ভাইরাস বিপজ্জনক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ছে এবং দেশের স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ হুমকি তৈরি করছে। এই ভাইরাস মোকাবিলা করতে প্রচুর অর্থেরও প্রয়োজন। কোরোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বিশেষ ত্রাণ তহবিল তৈরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । ‘পিএম কেয়ারস’ নামে ওই তহবিলে সমাজের সব স্তরের মানুষকে দান করার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি । বন্ধ গোটা দেশ, অচল অবস্থা দেশের অর্থনীতির।  জরুরি এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয়তা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের কথা বিবেচনা করে  সরকারি এই তহবিল চালু করা হয়েছে। এই তহবিলে নাগরিকদের স্বেচ্ছা ও স্বতঃস্ফূর্ত অর্থ সহায়তা গ্রহণ করা হবে। এমনই পরিস্থিতিতে সাধ্য মত অনুদানের মধ্যে দিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রিয় সরকারের পাশে দাঁড়াচ্ছেন সকলেই।সাধ্য মত অর্থ সাহায্য করছেন অনেকেই। সেই তালিকাতে এবার নাম লেখালেন বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার। প্রধানমন্ত্রীর এই তহবিল গঠনের ঘোষণার পর প্রথমেই ২৫ কোটি টাকা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন অক্ষয় কুমার। অক্ষয় প্রমান দিলেন, কেবল টিভির পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনেও তিনি সত্যিকারের একজন খিলাড়ি। টুইটারে অনুদানের কথা শেয়ার করেছেন অক্ষয় কুমার। নরেন্দ্র মোদীর ফান্ডের অ্যাকাউন্ট নম্বরও পোস্ট করে আবেদন করেছেন অনুদানের। নিজের সঞ্চিত অর্থ থেকেই এই টাকা তিনি ত্রাণ তহবিলে তুলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আক্কি নিজেই। টুইটারে তিনি লেখেন, ”এটা হল সেই সময়, যখন মানুষের বেঁচে থাকা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। আর এই সময় যাকিছু যেভাবে হোক করা যায়, সেটাই আমাদের করতে হবে। আমি আমার সঞ্চিত অর্থ থেকেই প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে এই টাকা দিলাম। আপনাদের কাছেও আবেদন নিজেদের সাধ্যমতো যতটা করা সম্ভব করুন। আগে জীবন বাঁচাতে হবে, জীবন থাকলে তবেই তো এই বিশ্ব থাকবে।”অক্ষয়ের এই পদক্ষেপে খুবই খুশি স্ত্রী টুইঙ্কল খান্না। স্বামীর জন্য গর্ববোধ করেন বলেও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীও অক্ষয়ের এমন কাজে গর্বিত ও আনন্দিত। তিনি টুইট করে অক্ষয়ের এমন কাজের প্রশংসা করেছেন। ভারতীয় সেলেবদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অনুদান অক্ষয়েরই। এর আগে হৃত্বিক রোশন ২০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। কপিল শর্মাও দিয়েছেন ৫০ লক্ষ। ক্রিকেটার সুরেশ রায়না ৫২ লাখ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়াও দেশের অনেকেই মোদির এই তহবিলে অর্থ সহায়তা করছেন। অক্ষয়ের এই পথ অনুসরণ করেন বলিউডের একাধিক তারকা। একই ভাবে নিজের সঞ্চিত অর্থ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন বরুণ ধাওয়ান। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বরুণ লিখেছেন, ”আমরা এই লড়াই জিতবই, দেশ বাঁচলে তবেই আমরা বাঁচবো।” নিজের সাধ্যমতো সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন গায়ক গুরু রণধাওয়া। তহবিলে ২০ লাখ টাকা দান করেন তিনি। টুইট করে তিনি লেখেন, “আমার সেভিংস থেকে ২০ লাখ টাকা দান করছি। বিভিন্ন শোয়ের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করেছি আমি। সেই টাকাই দান করছি…”। ৫ লাখ টাকা দিয়েছেন টেলিভিশন অভিনেতা অর্জুন বিজলানি। তিনি লেখেন, “দয়া করে জীবন বাঁচান। আমি জানি এই পরিমাণ টাকা কিছুই নয়। কিন্তু, তাও এটা কাজে লাগবে। আপনারাও সাহায্য করুন।”এই তালিকায় রয়েছেন কৃতি শ্যাননও। তবে কত টাকা তিনি তহবিলে দান করেছেন সে বিষয় খোলসা করেননি। শুধু টুইট করে লেখেন, “এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে সবারই উচিত এগিয়ে আসা। আমিও নিজের সাধ্য মতো সাহায্য করেছি। আপনারাও নিজের সাধ্য মতো দান করুন। কম বেশি যতটা সম্ভব ততটাই দান করুন। এটা কারও জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে…”। তবে ‘পিএম কেয়ার্স ফান্ড’ ঘোষণার আগেই ত্রাণ তহবিলে অর্থ দান করেছিলেন দক্ষিণী অভিনেতা রজনীকান্ত, প্রভাস, অল্লু অর্জুন, রাম চরণ, মহেশ বাবুর মতো অভিনেতারা। প্রভাস, দিয়েছেন মোট ৪ কোটি। মহেশ বাবু অন্ধ্র ও তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীদের ত্রাণ তহবিলে ১ কোটি টাকা দান করেছেন তিনি। অন্যদেরও সাহায্যে এগিয়ে আসার আরজি জানিয়েছেন মহেশ বাবু। পবন কল্যাণ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১ কোটি টাকা দান করেছেন। এছাড়া দুই তেলগু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের তহবিলেও ৫০ লক্ষ টাকা করে দিয়েছেন তিনি। অক্কির এই অনুদানের খবর প্রকাশ্যে আসা মাত্রই নেটিজেনদের আরও একবার নজর কাড়ল। বরাবরই তিনি দেশের বিভিন্ন বিষয় স্পর্শকাতর। তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন অক্ষয় কুমার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *