বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে হাস্যকৌতুকময় অভিনয়ের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন দিকপাল। মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে ১৯২০ সালের ২৬শে অগাস্ট জিতেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় ও সুনীতি বন্দোপাধ্যায়-এর পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করেন ভানু বন্দোপাধ্যায়। আজ তাঁর ৯৯তম জন্মদিন। ঢাকায় স্কুল এবং কলেজ শিক্ষা শেষ করে ১৯৪১ সালে তিনি আয়রন এন্ড স্টীল কম্পানিতে চাকরি নিয়ে কলকাতা আসেন। ১৯৪৭ সালে ‘জাগরণ’ ছবির মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবনের শুরু হয়। সেই বছরই ‘অভিযোগ’ নামে অন্য একটি ছবি মুক্তি পায়। এরপর ধীরে ধীরে ছবির সংখ্যা বাড়তে থাকে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘মন্ত্রমুগ্ধ’(১৯৪৯), ‘বরযাত্রী’(১৯৫১) এবং ‘পাশের বাড়ি’(১৯৫২)। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পায় ‘সাড়ে চুয়াত্তর’। এই ছবির মাধ্যমেই দর্শকদের নিজের অভিনয়ের গুণে আকৃষ্ট করা শুরু করেন ভানু বন্দোপাধ্যায়। এরপর একের পর এক ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘ওরা থাকে ওধারে’, ‘ভানু পেল লটারি’, ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’, ‘পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট’, ‘৮০তে আসিও না’। ১৯৬৭ সালে একটি ছবি মুক্তি পায়, ‘মিস প্রিয়ংবদা’ – যেখানে উনি চরিত্রের প্রয়োজনে মহিলা সেজে অভিনয় করেন। ‘ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট’ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালে। ভানুর শেষ ছবি ‘শোরগোল’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৪-তে। অভিনয়ের পাশাপাশি গানেও তাঁর পাওরদর্শিতা ছিল অতুলনীয়। চলচ্চিত্র জগতে কৌতুক রসের ভাবধারাকে এক অন্যমাত্রায় নিয়ে যান ভানু বন্দোপাধ্যায়। তাঁকে স্মরণ করে প্রতি বছর টেলি সিনে অ্যাওয়ার্ডস-এর মঞ্চে ‘ভানু বন্দোপাধ্যায় সেরা অভিনেতা’ পুরস্কার প্রদান করা হয়। আজ দিকপাল এই অভিনেতার জন্মদিনে টেলি সিনে-এ পক্ষ থেকে রইল শ্রদ্ধার্ঘ্য।