নিজের জীবনের কঠিন লড়াইয়ের কথা জানালেন অনুষ্কা শঙ্কর

প্রাণ রক্ষা করতে জরায়ু বাদ দিতে হল অনুষ্কা শঙ্করের। তাঁর পেটে প্রায় ১৩টিরও বেশি টিউমার হয়েছিল। সেগুলির জন্য দুবার অস্ত্রপচার করতে হয়েছে। অবশেষে তাঁর জরায়ু বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নিজের জীবনের এই ভয়ানক সত্যিটাই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ্যে এনেছেন খ্যতনামা সেতার বাদক, মিউজিক কম্পোজার তথা পণ্ডিত রবি শঙ্কর কন্যা অনুষ্কা শঙ্কর। তিনি লিখেছেন, ‘মাত্র ২৬ বছর বয়সেই আমি প্রথম বুঝতে পারি, আমার জরায়ুতে একটা ফাইব্রয়েডের (ক্যানসার বিহীন টিউমার) মত কিছু একটা রয়েছে। অস্ত্রপচারের মাধ্যমে ফাইব্রয়েডটা জরায়ু থেকে কেটে বাদ দেওয়া হয়। সেবারের মতো জরায়ুটা সুরক্ষিত করা হয়। এর পরবর্তীকালে আমি অবশ্য দুই সন্তানের মাও হয়েছি। জরায়ুর এই অস্ত্রপচার নিয়ে কেন বেশি কথা হয় না। এবিষয়ে আমি একজন মহিলাকে জিজ্ঞেস করেও ছিলাম, তার জবাবে তিনি বলেছিলেন, আজকাল কমবেশি বেশিরভাগ মহিলারাই এই সমস্যার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছে। গত মাসের পর থেকে আমার জরায়ুটা আর নেই। আমার দুটি অস্ত্রপচার হয়েছে। একটা স্ত্রীরোগের ও অন্যটি ক্য়ান্সারের জন্য। কারণ আমার জরায়ুর টিউমারগুলো ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছিল। টিউমারের কারণে জরায়ুর আকারটা প্রায় ৬ মাসের গর্ভবতীর মতো হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা ১৩টি টিউমারই অস্ত্রপচারের মাধ্যমে বের করে দেন। একটা টিউমার এতটাই বড় হয়েছিল, যে ওটি আমার পেশীর সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল। কিছুদিন আগে যখন আমি জানতে পারলাম, যে আমার জরায়ুটা কেটে বাদ দিতে হবে, তখন আমি কিছুদিনের জন্য অবসাদগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম, এবার হয়ত আমার নারীত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাবে। ভবিষ্যতে আর কোনওদিন আমি সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা ভাবতেও পারবো না। ভেবেছিলাম জরায়ু বাদ যাওয়ার ফলে হয়তবা আমার সন্তানরা তাদের মাকে হারাবে। আমার যৌনজীবনেও হয়ত প্রভাব পড়বে। এসব অনেক কথাই মাথায় এসেছিল। তবে যখন আমি এই বিষয়টা নিয়ে আমার বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতদের মধ্যে কথা বললাম তখন জানতে পারলাম যে কত মহিলাই এই ধরনের ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যেই দিয়ে যায়। অনেক মেয়ের সঙ্গেই যখন এধরনের ঘটনা ঘটে, তখন আমার মনে প্রশ্ন ছিল তাহলে আমার বিষয়টা নিয়েই কেন এত বেশি আলোচনা হচ্ছে। আমি অত্য়ন্ত দুঃখের সঙ্গে আমার তরুণ প্রজন্মকে প্রশ্ন করছি, আমরা কতটা নিরাবতার সঙ্গে এই বিষয়গুলিকে মোকাবিলা করার প্রত্যাশা করি। আমি সবসময়ই নিজেকে সেই দলেই ফেলেছি, যে আমি আমার চিন্তাভাবনাগুলি নিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলতে দ্বিতা বোধ করি না। এই ঘটনার পর আমি বুঝতে পারছি, আমি আমার যৌনস্বাস্থ্য, ঋতুচক্র নিয়ে কথা বলতে কতটা লজ্জিত বোধ করছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *