মানসিক স্বাস্থ্য ও মনরোগ নিয়ে কাজ করে ক্রিস্টাল অ্যাওয়ার্ড পেলেন দীপিকা

সিনে দুনিয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন দীপিকা পাড়ুকোন। আজ তিনি একজন সফল অভিনেত্রী। নিজের মনের মানুষ রণবীর সিং-কে নিয়ে সুখে সংসারও করছেন দিপ্পি। কিন্তু একটা সময়ে মানসিক অবসাদে চলে গিয়েছিলেন দীপকা। সেই মানসিক অবসাদের সঙ্গে লড়াই করে একসময় ঘুরে দাঁড়ান তিনি। ২০১৪ সালে নীরবতা ভেঙে প্রথম মানসিক স্বাস্থ্য ও অবসাদ নিয়ে প্রথম মুখ খোলেন দীপিকা। কথা বলেন তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া মানসিক অবসাদের ঘটনা প্রসঙ্গে। এমনকি মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার জন্য দীপিকার নিজেরও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রয়েছে, যার নাম  ‘ Live Love Laugh foundation’। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা প্রসারের জন্য এবার দীপিকা পাড়ুকোন পেলেন ক্রিস্টাল অ্যাওয়ার্ড। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাঁকে ক্রিস্টাল অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করেছে। রবিবার দাভোসে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। দীপিকার হাতে পুরস্কার তুলে দেন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের আওতাভুক্ত ওয়ার্ল্ড আর্ট ফোরামের চেয়ারপার্সন হিলডে স্কেওয়াব। ক্রিস্টার পুরস্কার জেতার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় সেটি পোস্ট করে নিজের সংস্থার সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে সেই ছবি ট্যাগ করেন দিপ্পি। এদিকে স্ত্রী ক্রিস্টাল অ্যাওয়ার্ড জেতার খবরে খুশি রণবীর সিং। তিনি দীপিকার ছবির নিচে লেখেন, ”অসাধারণ খবর, আমি তোমার জন্য গর্বিত বেবি। এই নীল পোশাকে তোমায় সুন্দর দেখাচ্ছে। অনেক শুভেচ্ছা রইল।” পুরস্কার পাওয়ার পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন দীপিকা। হতাশার সঙ্গে তার লড়াই কীভাবে এই নিয়ে সচেতনতা প্রচারের কাজের ক্ষেত্রে তাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে, সেই গল্পই দর্শকদের সঙ্গে শেয়ার করে নেন তিনি। দীপিকা বলেন, “আমার মনে আছে, ২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আমি যখন ঘুম থেকে উঠি তখন মনে হচ্ছিল আমার পেট যেন ফাঁপা। জীবনের কোনও লক্ষ্য ছিল না। প্রচণ্ড বিরক্ত হতাম। একাধিক কাজ করতে হলে বোঝা মনে হত। অকারণে খুব কাঁদতাম। প্রতিদিন সকালে ওঠা আমার কাছে তখন স্ট্রাগল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বিষাদগ্রস্ত হয়ে যেতাম। হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতাম। মা ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিলেন। আমার যে কোনও প্রফেশনাল সাহায্যের দরকার তা ধরতে পেরেছিলেন তিনি।” তিনি এও বলেন, এই পুরস্কার পেয়ে তিনি সম্মানিত। অবসাদ মারাত্মক ব্যধি। প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন এই পৃথিবীর কোথাও আত্মহত্যা করে। ভয় বা অবসাদের জন্য বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় এক ট্রিলিয়ান ডলার ক্ষতি হয়।  তিনি আরও বলেন, ‘হতাশা একটা সাধারণ মেডিক্যাল অসুস্থতা। এটা বুঝতে হবে যে, হতাশা অন্যান্য রোগের মতোই, আর এর চিকিৎসা করা যায়। ভালোবাসা ও ঘৃণার সম্পর্ক আমাকে অনেককিছু শিখিয়েছে। যারাই এই সমস্যায় ভুগছেন তাদের বলতে চাই ,আপনি একা নন। মানসিক সমস্যার সঙ্গে যুদ্ধ করা সহজ নয়। কিন্তু যদি মনে আশা থাকে, তবে সব যুদ্ধে জেতা যায়।’ মার্টিন লুথার কিংয়ের কথা উল্লেখ করে দীপিকা বলেন, তিনিও তো আশার উপরেই বিশ্বাস রেখেছিলেন। দীপিকার এই বক্তব্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের অফিশিয়াল টুইটারে পোস্ট করা হয়েছে। দীপিকার কথায়, বেঁচে থাকা, ভালোবাসা, ও হাসিখুশি থাকা তাঁর জীবনদর্শন।

View this post on Instagram

GRATITUDE!🙏🏽 #crystalaward2020 #wef2020 @tlllfoundation

A post shared by Deepika Padukone (@deepikapadukone) on

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *