অভিনেত্রী মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন তাঁর জামাই ডিকি সিনহা। বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন ডিকি। চলতি মাসের ১৩ তারিখে মৃত্যু হয় মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে পায়েল ডিকি সিনহার। ২০১০ সালে ব্যবসায়ী ডিকি সিনহার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন মৌসুমি-কন্যা পায়েল৷ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাঁদের প্রথম পরিচয় হয়৷ এরপরই দুজনে গাঁটছড়া বাঁধার সিদ্ধান্ত নেন৷ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন পায়েল। ছোট থেকেই টাইপ ১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত ছিলেন পায়েল । তাঁর চিকিৎসাও চলছিল । ২০১৭ সালে পায়েলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ কিন্তু ২০১৮ সালে স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন পায়েলের স্বামী ডিকি সিনহা৷গত বছর তিনি কোমায় চলে যান। যদিও বাড়িতে আনার পর থেকে পায়েলের মানসিক চিকিৎসা বন্ধ ছিল বলে খবর পাওয়া যায়৷ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আনার পর আচমকাই ১৩ ডিসেম্বর মাঝ রাতে মৃত্যু হয় মৌসুমি-কন্যার। বাড়িতে ফেরানোর পর পায়েলের চিকিতসা করানো হয়নি৷ তাঁর মানসিক চিকিতসাও বন্ধ ছিল বলে একাধিকবার অভিযোগ করেন মৌসুমি৷ এরপরই পায়েলের স্বামী ডিকি সিনহা ও মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সব সদস্যর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মৌসুমি৷ মৌসুমির অভিযোগ, পায়েলের হাসপাতালের বিল মেটায়নি ডিকি । যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে ডিকি বলেন, “পায়েল যখন অসুস্থ ছিল তখন তার মা একবারও তাকে দেখতে আসেনি । তার বোন ও বাবা মাঝে মধ্যে আসত ।” পায়েলের সঙ্গে মৌসুমির সম্পর্ক ভালো ছিল না বলেও জানিয়েছেন তিনি । বলেন, “মায়ের থেকে সেই ভালোবাসা কখনওই পায়নি পায়েল । কিন্তু, বাবার সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই কথা হত । কোনও বিষয় নিয়ে মা ও মেয়ের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল । এই বিষয়টি তার আত্মীদের থেকে জানতে হবে । এমনকী, আমার সঙ্গে বিয়ের আগে মায়ের পরিবর্তে বাবার সঙ্গে থাকত পায়েল ।”সম্প্রতি পায়েলের স্বামী ডিকি সিনহা অভিযোগ করেন, মৃত্যুর পর মেয়েকে শেষবারের জন্য দেখতেও আসেননি মৌসুমি৷ শেষ যাত্রায় পায়েলকে দেখতে আসেন তাঁর বাবা এবং বোন৷ এরপরই ফুঁসে ওঠেন ডিকি সিনহা৷ পায়েলের অস্থি বিসর্জনের পরই মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে সাফ জানান ডিকি সিনহা৷কিন্তু, মৌসুমি যখন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন তখন কেন চুপ করে ছিলেন ডিকি ? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার ফোকাস যাতে অসুস্থ স্ত্রীর উপর থেকে সরে না যায় তার জন্য সে সময় চুপ ছিলাম । পায়েলের মৃত্যুর পর বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেছিলাম । তারপর তার পরিবারের সদস্যদের কাছে মেসেজও করি । কিন্তু, কেউ আসেননি । দেহ দাহ করার পর সব নিয়ম পালন করতে আমার কিছুটা সময় লাগবে। ৪০ দিন পর ত্রিবেণীতে পায়েলের অস্থি বিসর্জন করা হবে৷ তার আত্মা শান্তি কামনার জন্য সব কিছুই করব । তারপর জানুয়ারি মাসে মৌসুমির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করব ।” পায়েল এবং ডিকির বিয়েতে রাজি ছিলেন না মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়৷ ফলে মেয়ের বিয়ের পর থেকেই সিনহাদের প্রতি চট্টোপাধ্যায়রা অসন্তোষ প্রকাশ করতে শুরু করেন বলে খবর৷ যদিও এ বিষয়ে কোনও কোনও মন্তব্য করেননি মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়রা৷ পায়েলের মৃত্যুর পর দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা চরমে পৌঁছয়৷