মাত্র ১২ বছর বয়সে নাটকের মঞ্চে প্রথম পা রাখেন বারাঙ্গনা বিনোদিনী দাসী। উনিশ শতকের বাঙালি বারাঙ্গনা থেকে মঞ্চের সম্রাজ্ঞী হয়ে ওঠেন নটী বিনোদিনী। বারবনিতার পরিবেশ থেকে একেবারে কলকাতার ন্যাশানাল থিয়েটারে প্রবেশ করেন তিনি। অভিনয় গুরু ছিলেন গিরীশ্চন্দ্র ঘোষ। বাংলার মঞ্চে প্রথম অভিনেত্রী হিসেবে শত্রুসংহার নাটকের দ্রৌপদীর সখীর ছোট্ট ভূমিকায় অভিনয় করেন। সেই সময় মাসিক বেতন পেতেন ১০ টাকা। এরপর বেঙ্গল থিয়েটারে প্রথম অভিনেত্রী হিসেবে মঞ্চস্থ করেন ১৮৭৪ সালে। নাচে গানে পারদর্শী বিনোদিনী খুব তাড়াতাড়ি অভিনয় জগতে নিজের ছাপ ফেলতে থাকেন। এরপর প্রথম শ্রেনীর অভিনেত্রী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। ১৮৭৪ সাল থেকে একটানা ১২ বছর অভিনয় করেন। ৫০টি নাটকে তিনি ৬০টিরও বেশি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এই ঐতিহাসিক চরিত্রটি নিয়েই সিনেমা বানাতে চলেছেন পরিচালক প্রদীপ সরকার। তাঁর কথায়, ‘বর্তমানে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মহিলারা প্রোযোজকের ভূমিকা পালন করছেন। আজকের অভিনেত্রীরাও নিজেদের প্রোডাকশন হাউস লঞ্চ করছেন। কিন্তু , আজ থেকে প্রায় ১৫০ বছর আগে তা ভাবাই যেত না। বাংলায় বসে একমাত্র নারী, যিনি মহিলা হয়েও প্রথম থিয়েটার গড়ার স্বপ্ন দেখেন বিনোদিনী দাসী। শুধু স্বপ্ন দেখাই নয়, নিজের লক্ষ্যেও তিনি পৌঁছেছিলেন। অভিনয় জগতে সাফল্য পেলেও তাঁর জীবনে নানান ঝড়ঝাপ্টা ছিল। বহু পুরুষ তাঁকে নিজের মতো করে পরিচালনা করতেন। প্রচুর মানুষ তাঁকে ধোঁকা দিয়েছিলেন। তাঁর জীবনীর উপর পরীক্ষা -নিরীক্ষা চালিয়ে তবেই এই প্রজেক্টে হাত দেওয়া হয়েছে। এর পিছনে রয়েছে কলকাতার একজন, যিনি আমাকে সবরকমভাবে সাহায্য করেছেন’। প্রদীপ সরকারের নটী বিনোদিনীর বায়োপিকে কাজ করবেন প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। তাঁর কথায়, ‘এই বায়োপিকের জন্য ঐশ্বর্যর কথা আমার মাথায় সবসময়ই ছিল। কিছু মাস আগে আমি ওঁর কাছে যাই। প্রথম ন্যারেশনেই কাহিনি পছন্দ করেন তিনি ও প্রজেক্টটির সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বলে জবাব দিয়েছেন ঐশ্বর্য।’ মৌখিকভাবে কথোপকথনের মাধ্যমে পুরো ব্যাপারটা ঘটলেও এখনও বাকি খাতায় কলমে কাজকর্ম। তবে পরিচালক প্রদীপের আশা, তিনি এই প্রজেক্টে যখন হ্যাঁ করেছেন, তখন সইও করবেন।