প্রয়াত জনপ্রিয় রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মহম্মদ

প্রয়াত জনপ্রিয় রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মহম্মদ। বাংলাদেশের ঢাকায় শিল্পীর বাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। সাদি মহম্মদের ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ জানান, আজ বুধবার তানপুরা নিয়ে সংগীত চর্চা করছিলেন তিনি। সন্ধ্যার পর হঠাৎ ঘরের দরজা বন্ধ দেখেন। কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জানা গিয়েছে গত বছর জুলাই মাসে সাদি মহম্মদের মা বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান, তারপর থেকে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। সাদি মহম্মদের পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার সন্ধ্যার পর হঠাৎ তার ঘরের দরজা বন্ধ দেখা যায়। অনেকক্ষণ পর্যন্ত তাঁকে ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে নূরজাহান রোডের বাড়ির তিন তলায় দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছেন প্রয়াত শিল্পী আত্মহত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা অবধি নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের জন্য সাদি মহম্মদের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। সাদি মহম্মদের জন্ম ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর। বাবা সলিমউল্লাহ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। তাঁর বাবার নামে ঢাকার মোহাম্মদপুরের সলিমউল্লাহ রোডের নামকরণ করা হয়েছে। গত বছরের ৮ জুলাই সাদি মহম্মদের মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ (৯৬) বার্ধক্যজনিত রোগে মারা যান। মা মারা যাওয়ার পর থেকে বিষণ্নতায় ভুগছিলেন শিল্পী সাদি মহম্মদ। সাদি মহম্মদ রবীন্দ্রসংগীতের ওপর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্বভারতীতে শান্তিদেব ঘোষ ও কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গান শেখেন তিনি। ২০০৭ সালে ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে সাদি মহম্মদ সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তাঁর ‘শ্রাবণ আকাশে’ ও ২০১২ সালে তাঁর ‘সার্থক জনম আমার’ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। অসংখ্য রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কণ্ঠে। সঙ্গে আধুনিক গানও করেছেন তিনি। সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১২ সালে তাঁকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করে চ্যানেল আই। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি থেকে পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার।