প্রয়াত হলিউড লেজেন্ড অভিনেতা কর্ক ডগলাস। মৃত্যুকালে হলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতার বয়স হয়েছিল ১০৩ বছর। যুক্তরাষ্ট্র স্থানীয় সময় অনুসারে বুধবার তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বার্ধক্য জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। কর্কের ছেলে ও বিখ্যাত অভিনেতা-পরিচালক মাইকেল ডগলস একটি সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আমি আর আমার ভাইয়েরা গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, কর্ক ডগলস ১০৩ বছর বয়সে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন । এই পৃথিবীর কাছে উনি একজন লেজেন্ড ছিলেন, সিনেমার স্বর্ণযুগের অন্যতম অভিনেতা । শুধু অভিনেতা নন, উনি একজন সদাশয় ব্যক্তি ছিলেন, ন্যায়ের প্রতি যাঁর দায়বদ্ধতা আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে ।” মাইকেল আরও লিখেছেন, “পৃথিবীর কাছে উনি যা-ই হন না কেন, আমার ও আমার ভাই জোয়েল ও পিটারের কাছে উনি শুধুমাত্র বাবা, ক্যাথরিনের কাছে উনি শুধুমাত্র শ্বশুর, নাতি-নাতনিদের কাছে শুধুমাত্র দাদু আর স্ত্রী অ্যানের কাছে উনি একজন যোগ্য স্বামী ।” নিউইয়র্কে জন্ম গ্রহণ করেন কর্ক ডগলাস। কুড়ি শতকের সব থেকে জনপ্রিয় অভিনেতাদের অন্যতম ছিলেন তিনি। সাদাকালো ছবির পর্দা থেকে শুরু যাত্রা। সেখান থেকেই একের পর এক ছবিতে কাজ। মুহূর্তে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন এই অভিনেতা। বুধবার তাঁর মৃত্যুতে পরিবারে নেমে আসে শোক। ১৯৪৬ সালে বারবারা স্ট্যানউইকের বিপরীতে ‘দ্য স্ট্রেঞ্জ লাভ অফ মার্থা আইভারস’ দিয়ে বড় পর্দায় যাত্রা শুরু করেন ডগলাস। স্বভাবজাত অভিনয় প্রতিভার কারণে দর্শক-সমালোচকেরা ভূয়সী প্রশংসায় প্রশংসিত হন তিনি। ১৯৪৯ সালের ‘চ্যাম্পিয়ন’ চলচ্চিত্রে বক্সারের চরিত্র দিয়ে নিজের প্রথম অস্কার মনোনয়ন অর্জন করেন তিনি। এপরেও আরো দুইবার অস্কারের জন্য মনোনীত হন তিনি। ১৯৯৬ সালে অস্কার পান এই প্রতিভাবান অভিনেতা। নব্বইটিরও বেশি টেলিভিশন নাটক ও চলচ্চিত্রের নায়ক হয়েছিলেন তিনি। ক্ল্যাসিক চলচ্চিত্র ‘সাইক্লোপস’-এর মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন সিনেমা প্রেমীদের প্রিয় অভিনেতা। ষাটের দশকের জনপ্রিয় এই অভিনেতা একাধারে মঞ্চ ও সিনেমায় অভিনয় করে গেছেন। তার উল্লেখ্যযোগ্য সিনেমাগুলো হলো- এইস ইন দ্য হোল (১৯৫১), দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য বিউটিফুল (১৯৫২), অ্যাক্ট অব লাভ (১৯৫৩), টু থাউজেন্ড লিগ আন্ডার দ্য সি (১৯৫৪), চ্যাম্পিয়ন (১৯৪৯), লাস্ট ফর লাইফ (১৯৫৬) ও স্পার্টাকাস (১৯৬০)। তিনবার অস্কারের জন্য মনোনীত হন তিনি। সেই ছবিগুলি হল- চ্যাম্পিয়ন (১৯৪৯), দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য বিউটিফুল (১৯৫২), এবং লাস্ট ফর লাইফ (১৯৫৬) এর জন্য। হলিউডে ৫০ বছর অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ১৯৯৬ সালে সম্মানসূচক পুরস্কার পেয়েছিলেন। কর্কের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হলিউড সহ বিশ্বব্যাপী সিনেমাপ্রেমীরা।