বিগত তিন মাস ধরে জ্বলছে অস্ট্রেলিয়া। দাবানলের আগুনে প্রাণ হারিয়েছে ইতিমধ্যেই হাজার হাজার পশু। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের দাবানল পরিবেশবিদ ও সাধারণ মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। বেঘোরে প্রাণ যাচ্ছে পশু পাখিদের। ভয়াবহ অবস্থা দেখে শিউড়ে উঠছে নাগরিক সমাজ। নিউ সাউথ ওয়েলসের দাবানলে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৫ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছে। পুড়েছে ২০০০টিরও বেশি ঘর। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ওই দাবানলে এখন পর্যন্ত প্রায় একশ কোটি প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। হেলিকপ্টার করে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয়েছে তিন হাজার সেনা। শত চেষ্টাতেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভবপর হচ্ছে না। সম্প্রতি ভিক্টোরিয়াতে আরও একজনের প্রাণহানির খবর প্রকাশ্যে উঠে এসেছে। এই অবস্থায় নেট দুনিয়ায় সরব সকলেই। পরিবেশবিদদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া নিয়ে মুখ খুলেছেন একাধিক তারকারা। তহবিলে যে যাঁর মত আর্থিক সাহায্যও করেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের জন্য তহবিল সংগ্রহের অনুরোধ জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন হলিউড তারকারা। সেই তালিকাতে এবার নাম লেখালেন অস্কারজয়ী হলিউড তারকা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। দগ্ধ অস্ট্রেলিয়ার পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে ভাঁজ পড়েছে লিওনার্দোর কপালেও। আর যার জন্যে তিনি নিজে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ‘আর্থ অ্যালায়ানস’ নামে এক পরিবেশপ্রেমী সংস্থা যার সহ-সভাপতি লিওনার্দো দি ক্যাপ্রিও নিজে, সেই সংস্থার তরফে এমন সংকটজনক পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে ইতিমধ্যেই ‘অস্ট্রেলিয়ার দাবানল’ তহবিলে দান করেছেন ৩ মিলিয়ন ডলার। শুক্রবার এই আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন হলিউড অভিনেতা। সাধারণ মানুষদেরও নিজেদের সাধ্যমতো আর্থিক সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন। ডিক্যাপ্রিও ছাড়াও এরইমধ্যে এক মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অভিনেতা ক্রিস হেমসওয়ার্থ। এছাড়াও অনুদান দিয়েছেন গায়িকা পিঙ্ক, অভিনেত্রী নিকোল কিডম্যান, কিথ আরবান, কাইলিও প্রমুখ। পরিবেশ রক্ষার জন্য বরাবরই তিনি এগিয়ে আসেন। হলিউডের ডাকসাইটে অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও যে পরিবেশপ্রেমী, তা বোধহয় অল্পবিস্তর অনেকেরই জানা। পরিবেশদূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আগাগোড়াই সরব তিনি। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবে এর আগে একাধিকবার মার্কিন প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন লিওনার্দো। তাঁর বক্তব্য, “গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য যেভাবে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে, অচিরেই সারা বিশ্বের জন্য দুর্দিন আসতে চলেছে। তাই এই অবস্থার মোকাবিলা করার জন্য সবার উচিত এগিয়ে আসা।” অস্কারের মঞ্চে ‘দ্য রেভেনান্ট’ ছবির জন্য পুরস্কার নিতে গিয়েও তাঁর গলায় শোনা গিয়েছিল পরিবেশ নিয়ে চিন্তার সুর। লিও বলেছিলেন, “বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি মোটেই হেলাফেলা করার মতো নয়।” এবার অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী দাবানল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন লিও। ডিক্যাপ্রিও বলেন, ‘আমরা প্রকৃতির কাছে বারবার হেরে যাচ্ছি। বায়ু দূষণ থেকে শুরু করে প্রকৃতির বিভিন্ন উপদান এখন হুমকির দিকে। সেই ফলাফর বিভিন্ন বিপর্যয়ের মাধ্যমে আমরা পাচ্ছি। এতগুলো প্রাণী মারা গেল। আমি বলবো ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। কারণ প্রকৃতি আমাদের বড় বন্ধু।’ এর আগে অ্যামাজনের জঙ্গল বাঁচাতে ৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছিলেন তিনি। পরিবেশ রক্ষায় জন্য তিনি আর্থ অ্যালায়েন্স নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছেন। এই সংগঠন থেকেই পৃথিবীর বৃহত্তম রেইনফরেস্ট অ্যামাজনের মূল্যবান সম্পদ ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় সহযোগিতা করেছিলেন তিনি।
Earth Alliance is committing $3m to the #AustraliaWildfireFund to assist firefighting efforts, aid communities, enable wildlife rescue, and support long term restoration with @aussie_ark @BushHeritageAus @WIRES_NSW @emcollective @Global_Wildlife. Join us: https://t.co/nEKBk1QcdP pic.twitter.com/fljys7VxXp
— Earth Alliance (@earthalliance) January 9, 2020